
ছবি তারানা হালিমের ফেইসবুক পেইজ থেকে নেওয়া
২০০১ সালের নির্বাচনের পর গণধর্ষণের শিকার পূর্ণিমা রাণীকে নিজের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
এই নিয়োগের কথা নিশ্চিত করে বুধবার বিকালে তারানা সাংবাদিকদের বলেন, “আমার পরিকল্পনায় ছিল ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াতের নির্যাতনের শিকার নারীদের জন্য কিছু করার।
“আমার ব্যক্তিগত কর্মকর্তার পদটি খালি থাকায় পূর্ণিমাকে ওই পদে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই এবং বৃহস্পতিবার থেকে সে অফিস শুরু করবে।”
নির্যাতিত এই নারীর দৃঢ়চিত্তের পরিচয় পাওয়ার কথাও বলেছেন প্রতিমন্ত্রী।
“পূর্ণিমা প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী মেয়ে। নিয়োগ দেওয়ার পর ফেইসবুক পেইজে ছবি দেওয়ার সময় তার ছবি আমি ব্লার করে দিতে চেয়েছিলাম, সে বললো ‘ছবি দিতে কোনো সমস্যা নেই, এটি আমার লজ্জা না’।”
এতদিন পর পূর্ণিমাকে খুঁজে পেতে কষ্ট হওয়ার কথাও বলেন তারানা।
পূর্ণিমা পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় গান শিখিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, “পূর্ণিমার পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহায়তা করেছেন। পূর্ণিমা জানিয়েছে, সে প্রধানমন্ত্রীকে মামনি বলে সম্বোধন করে।”

ছবি তারানা হালিমের ফেইসবুক পেইজ থেকে নেওয়া
পূর্ণিমাকে নিয়োগ দিয়ে নিজের ফেইসবুক পাতায় তারানা লিখেছেন, “মনে পড়ে সেই পূর্ণিমাকে? ২০০১ এর ১ অক্টোবর নির্বাচন-পরবর্তী বিএনপি-জামায়াতের পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিল ১৪ বছরের মেয়েটি। হ্যাঁ, আমি সিরাজগঞ্জের সেই পূর্ণিমা শীলের কথা বলছি।
“আজ আমি গর্বিত আমি পূর্ণিমাকে আমার ‘পার্সোনাল অফিসার’ হিসাবে নিয়োগ দিলাম। পূর্ণিমা তোমাকে আমরা ভুলে যাইনি। জীবনের অন্ধকার রূপ তুমি দেখেছ, আলোর জগতে তোমায় স্বাগতম… শুরু হোক নতুন পথচলা। তোমাকে অভিবাদন প্রিয় পূর্ণিমা।”
২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট বিজয়ী হওয়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে আক্রান্ত হয় হিন্দু সম্প্রদায়, এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হন স্কুলছাত্রী পূর্ণিমা। ধর্ষণকারীরা সবাই চারদলীয় জোটের সমর্থক হিসেবে পরিচিত।
২০১১ সালের ৪ মে এই ধর্ষণ মামলায় ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করে আদালত।