
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে নারায়ণগঞ্জের একটি বাড়ির ও পরিবারের নাম উঠে এসেছে। সেই পরিবারটি হলো খান সাহেব ওসমান আলীর পরিবার। ঐতিহাসিক সেই বাড়িটি হলো ওসমান আলী সাহেবের বায়তুল আমান। যে খান সাহেব ওসমান আলী হলেন শামীম ওসমান সাহেবের দাদা, শামসুজ্জোহা খান সাহেবের বাবা, ভাষা সৈনিক নাগিনা জোহর শশুড়। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক পরিবারের সদস্যরা কেন বার বার অপপ্রচারের শিকার হচ্ছেন, তা একটু বিশ্লেষণ করলে সহজেই অনুমিত হয়। একাত্তরের পরাজিত শক্তি মওদুদীবাদী জামাত শিবির ও তাদের পুনঃ জন্ম দাতা সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান বার বার আঘাত প্রাপ্ত হয়েছেন। আসুন একটু ওসমান পরিবারের অতীত ইতিহাসটা দেখে নেই–
শামছুজ্জোহা খান (শামীম ওসমানের বাবা) ৭১ সালে শেখ হাসিনা এবং তাঁর বন্দী পরিবারকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে পাকিস্তানী হানাদারের গুলিতে আহত হয়েছিলেন।
প্রয়াত নাসিম ওসমান (শামীম ওসমানের ভাই) বিয়ের কিছু দিন পরেই নব পরনীতা স্ত্রীকে রেখে বঙ্গবন্ধুর হত্যার সশস্ত্র বদলা নিতে গিয়ে ভারতে গিয়ে তিন বছর নির্বাসনে কাটিয়েছিলেন।
শামীম ওসমান ৮ম শ্রেনির কিশোর থাকা কালীন ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে দেয়ালিকা লিখে যখন প্রতিবাদ জানাচ্ছিলো ঠিক তখনই তৎকালীন পুলিশের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছিলেন।
শামিম ওসমান সহযোদ্ধাদের নিয়ে ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান সহ ১৯ জন মন্ত্রীকে নারায়ণগঞ্জে ঢুকতে দেন নাই। যার জন্য সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের পেটুয়া বাহিনীর প্রচণ্ড আঘাতে রক্তাক্ত হয়েছিলেন।
শামিম ওসমান ১৯৮৬ সালে আলী আহসান মুজাহিদকে তার স্কুলে বাচ্চাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বিরোধী উল্টাপাল্টা শিক্ষা দেয়ার অপরাধে চেয়ার দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলেন। ফাঁসির আগ পর্যন্ত ৬টা সেলাইযের দাগ ছিল মুজাহিদের মাথায়।
শামিম ওসমান ২০০০ সালে তোলারাম কলেজের কলা ভবনের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপনের সময় নারায়নগজ্ঞের পবিত্র মাটিতে রাজাকারের শিরোমনি যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম ও কুকুরের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষনা দিয়ে অবাঞ্ছিত করে রেখেছিলেন।
শামীম ওসমান ২০০০ সালে বাংলাদেশের সব বদমাশদের আড্ডাখানা নারায়ণগঞ্জের টানবাজারের গডফাদার, বিএনপি নেতা দৌলত খান ও পুত্র জাকির খানের টানবাজার ও নিমতলী পতিতালয় ভেঙে দিয়েছিলেন। সেদিন থেকেই নারায়ণগঞ্জের নারীরা বুক ভরে শ্বাস নিতেছেন।
বেগম খালেদা জিয়ার লংমার্চ নারায়ণগঞ্জের উপর দিয়া যাওয়া আটকে দিয়েছিলেন।
উপরোক্ত কারণ গুলা বিশ্লেষণ করলেই সহজেই বলা যায় শামীম ওসমান বিএনপি জামাতের কাছে গডফাদার।
কিন্তু সেলিনা হায়াৎ আইভি কেন কথায় কথায় শামীম ওসমানকে গডফাদার বলেন ? তার অতীত ইতিহাস কি ?
নারায়ণগঞ্জ প্রথম পৌর নির্বাচনে (১৯৭৪) পৌর চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের সমর্থন পান মহিউদ্দিন আহম্মেদ খোকা ওরফে খোকা মহিউদ্দিন। সেদিন বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রাথী হন আইভীর বাবা আলী আহমদ চুনকা।
একই ভাবে প্রথম সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনে (২০১১) আওয়ামী লীগ থেকে সমর্থন পান শামীম ওসমান। সেদিনও শেখ হাসিনা ঘোষিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রাথী হন আলী আহমদ চুনকার মেয়ে সেলিনা হায়াৎ আইভি।
পরিশেষে এটুকুই বলব, রক্ত রক্তের কথা বলে। মানুষ তার মুলের দিকেই ধাবিত হতে থাকে।