যে ১০টি খাদ্য সংমিশ্রণ মারাত্মক স্বাস্থ্যগত বিপদ ডেকে আনতে পারে।

জনতার নিউজ

302

কিছু কিছু খাদ্য আছে যেগুলো একতে খেলেই বেশি উপকার। আবার কিছু কিছু খাদ্য আছে যেগুলো হজম হওয়ার জন্য ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশ-পরিস্থিতির দরকার হয়। বেশিরভাগ মানুষই এমন কিছু খাদ্য সংমিশ্রণে অভ্যস্থ যেগুলো আদতে স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ক্ষতিকর। যেমন, পনির ও মাংস, সালাদে ফল, দুধ ও ফল একত্রে খাওয়া। বিজ্ঞানী এবং স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন এই খাদ্য সংমিশ্রণগুলো ক্ষতিকর।

ক্ষতিকর খাদ্য সংমিশ্রণ থেকে মুখের দুর্গন্ধ, শুষ্ক ত্বক, র‌্যাশ, দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ, অনিদ্রা, শক্তিহীনতা এবং হজম প্রক্রিয়ায় গণ্ডগোল সহ নানা ধরনের মারাত্মক স্বাস্থ্যগত সমস্যা হতে পারে।

কিছু খাদ্য আছে হজম হতে অনেক সময় লাগে। আবার কিছু খাদ্য দ্রুত হজম হয়ে যায়। আর এ কারণেই আপনাকে জানতে হবে কোন খাদ্যের সঙ্গে কোনো খাদ্যের সংমিশ্রণ ঘটালে কোনো সমস্যা হবে না। এখানে রইল এমন ১০টি খাদ্য সংমিশ্রণের তালিকা যেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে।

১. দুটি উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার
ডিমের সঙ্গে মুরগি, গরু বা খাসির মাংস খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে। তারচেয়ে বরং প্রথমে হালকা প্রোটিন যুক্ত খাবারটি খান। এরপর মাংস খান। অন্তত ১০ মিনিট পরে দুটি প্রোটিনযুক্ত খাবার খান।

২. কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিন
কার্বোহাইড্রেট এর সঙ্গে প্রোটিন একত্রে খেলে পেটে গ্যাস, স্ফীতি এবং ফাঁপার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া হজমেও অনেক সময় লাগতে পারে। যেমন ভাতের সঙ্গে আলু খেলে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। সুতরাং প্রোটিন বা শ্বেতসার জাতীয় খাবারের সঙ্গে শ্বেতসারহীন খাবার খান।

৩. খাবার খাওয়ার ফল
ফলের সঙ্গে আর কোনো খাবারেরই সংমিশ্রণ ঘটানো উচিত নয়। কারণ ফলে থাকে সরল সুগার যা হজমে তেমন কোনো সময়ই লাগে না। আর পাকস্থলিতেও বেশিক্ষণ থাকে না তা। চর্বি, প্রোটিন এবং শ্বেতসার সমৃদ্ধ খাবার হজমে অনেক সময় লাগে। ফলে খাবার খাওয়ার পরই ফল খেলে তাও হজমে দেরি হয় এবং অনেকক্ষণ পাকস্থলিতে অবস্থান করার ফলে পঁচতে শুরু করে।

৪. খাবারের সঙ্গে পানি বা ফলের জুস পান
খাবার খাওয়ার সময় পানি বা ফলের জুস খেলে মারাত্মক ক্ষতি হয়। কারণ পানি পাকস্থলির হজমের অ্যানজাইম বা এসিডগুলোকে তরল করে ফেলে এবং প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও চর্বিকে ভেঙ্গে হজমের ক্ষমতা নষ্ট করে। সুতরাং খাবার খাওয়ার অন্তত ১০মিনিট পর পানি খান।

৫. পনির পাস্তা সসের সঙ্গে টমেটো
টমেটো স্বভাবের দিক থেকে এসিডিক বা ক্ষারীয়। সুতরাং পাস্তার মতো শ্বেতসারজাতীয় কার্বোহাইড্রেট এর সঙ্গে না মেশানোই ভালো। এসিড এর সঙ্গে কার্বস এর সংমিশ্রণ এড়িয়ে চলুন। কারণ এটি আপনার হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে দিবে এবং আপনাকে ক্লান্ত ও অবসাদগ্রস্ত করে তুলবে।

৬. দুধ এবং কমলার জুসের সঙ্গ সিরিয়াল
দুধে আছে ক্যাসেইন আর কমলার জুসে আছে এসিড। এই দুটি উপাদান একত্র হলে দুধকে জমিয়ে ফেলতে পারে। এছাড়া শ্বেতসারযুক্ত সিরিয়ালে থাকা এনজাইমগুলো ধ্বংস করতে পারে। এই বাজে খাদ্য সংমিশ্রণ এড়াতে সিরিয়াল খাওয়ার এক ঘন্টা আগে বা পরে ফলের জুস খান।

৭. শীম এবং পনির
শীম এবং পনির একসঙ্গে খেলে পেট ফাঁপা, গ্যাস এবং অন্যান্য হজম সংক্রান্ত্র সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। পনির হলো দুগ্ধজাত খাবার যা শীমের সঙ্গে পেটে গ্যাস সৃষ্টি হতে পারে। আর আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি শক্তিশালী না হয় তাহলে পনির এবং শীম অবশ্যই আলদা করে খান।

 

৮. দুধ এবং কলা
প্রাচীন ভারতীয় স্বাস্থ্যবিজ্ঞান আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এই দুটি খাবারের সংমিশ্রণকে সবচেয়ে ভারী এবং ট্রক্সিন বা বিষ উৎপাদক হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এই দুটি খাবার একসঙ্গে খেলে শরীর ভারী হয়ে যাওয়া এবং মস্তিষ্কের কার্যক্রমের গতি ধীর হয়ে আসার মতো সমস্যা দেখা দেয়। তবে আপনি যদি কলার লাচ্ছি পছন্দ করেন তাহলে এর সঙ্গে এলাচ মিশিয়ে নিন। তাহলে আর হজমের সমস্যা হবে না।

৯. ফল ও দই
দইয়ের সঙ্গে ফল খেলে পেটে টক্সিন বা বিষ উৎপাদিত হয় এবং সাইনাসে কফ জমা, ঠাণ্ডা-সর্দি, কফ এবং এলার্জি হয়।

১০. আলু ও বেগুন এর সঙ্গে শসা ও টমোটো
সালাদে কখনোই আলু, মরিচ, বেগুন এর সঙ্গে টমেটো ও শসার সংম্রিশণ ঘটাবেন না। কারণ এই খাদ্য সংমিশ্রণটি আপনার হজম প্রক্রিয়ার গতি ধীর করে দিবে। তারচেয়ে বরং সালাদে স্পিনাক এবং সালাদ ড্রেসিং এর জন্য অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here