Home
প্রতিবেদন প্রধান বিচারপতি সিনহার পেশাগত গুরু হলেন, ড. কামাল হোসেন। কিন্ত গডফাদার` কে?

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, সম্প্রতি তাঁর নেতৃত্বে দেওয়া রায় নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উদাহরণ দিয়েছেন। পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট কদিন আগেই এক রায়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নওয়াজ শরিফকে অযোগ্য ঘোষণা করেছে। অযোগ্য ঘোষণা সংক্রান্ত রায়ের শুরুই হয়েছে ‘গডফাদার’ উপন্যাসের কথা দিয়ে, নওয়াজ শরিফকে তুলনা করা হয়েছে ‘গডফাদার’ এর সঙ্গে। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি যেহেতু পাকিস্তান প্রসঙ্গ এনেছেন, তাই ওই রায়ের সূত্র ধরেই প্রশ্ন জাগে, প্রধান বিচারপতির ‘গডফাদার’ কে?
অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রধান বিচারপতির পেশাগত গুরু হলেন, ড. কামাল হোসেন। তাঁর ঘনিষ্ঠতম বন্ধু হলেন অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। সিলেট থেকে ঢাকায় এসে বিচারপতি সিনহা বিশিষ্ট আইনজীবী সবিতা রঞ্জন পালের চেম্বারে কাজ শুরু করেন। তাঁকে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের জন্য বিচারপতি সাহাবুদ্দিনের কাছে সুপারিশ করেন ড. কামাল হোসেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় যখন দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে বিচারপতি থেকে অপসারনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তখনো তাঁকে বাঁচান ড. কামাল হোসেন। ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে বিচার বিভাগে শুদ্ধি অভিযান শুরু করে। সেই শুদ্ধি অভিযানে দুর্নীতিবাজ বিচারপতিদের তালিকা প্রনয়ণ করা হয়। এদের এক এক করে অপসারণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়। বিচারপতি সিনহাকেও চায়ের দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল বঙ্গভবনে। কিন্তু তিনি পালিয়ে বাঁচেন। এ সময় ড. কামাল হোসেনের হস্তক্ষেপে তিনি বেঁচে যান।
ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের ব্যাপারে ড. কামাল হোসেনের ভূমিকাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। রায়ে বিচারপতি সিনহা ড. কামাল হোসেনের উপস্থাপনা থেকেই বেশিটা অংশ নিয়েছেন। সম্প্রতি ড. কামাল হোসেন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘এই রায় থেকে একটি শব্দও বাদ দেওয়া অসম্ভব, তাঁর এই মন্তব্যের পর নতুন করে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। রায় পরিমার্জন করা যাবে কিনা, এ নিয়ে ড. কামাল কথা বলার কে? – এ প্রশ্ন তুলছেন বিভিন্ন মহল।
শুধু এই রায় নয়, ড. কামাল আপিল বিভাগে আলাদা খাতির পান। এইতো ক’দিন আগেই প্রকাশ্য এজলাসে ড. কামাল হোসেন অ্যাটর্নি জেনারেলকে ‘বাস্টার্ড’ বলে গালি দিলেন। অথচ আপিল বিভাগ এরকম ‘অসদাচরণ’ আমলে নিলো না। গত ২৪ আগস্ট এক অনুষ্ঠানে ড. কামাল হোসেন রায়ের পক্ষে সাফাই গেয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে, বর্তমান সংসদের ১৫৪ জন এমপির বিনা নির্বাচনে সংসদ সদস্য হওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এক রিট আবেদন খারিজ হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে করা ওই রিট নিয়ে ড. কামাল হোসেন ছুটির পরই আপিল বিভাগে যাবেন বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। সেখানে ড. কামালের আবেদনের ভিত্তি হবে ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে দেওয়া আপিল বিভাগের পর্যবেক্ষণ। আপিল বিভাগ যদি রায় দেয়, সংসদ সদস্যরা অবৈধ তাহলে শুধু এই সংসদ নয়, গণতন্ত্রও বিপন্ন হবে। সেজনই কি এত আয়োজন? ড. কামাল কি প্রধান বিচারপতির ঘাড়ে বন্দুক রেখে গুলি করতে চাইছেন গণতন্ত্রকে?