
কয়েক বছর আগে যখন টেকনাফের সমুদ্র উপকূলীয় পয়েন্ট দিয়ে রমরমা মানব পাচার চলছিল সে সময় বাঘু ছিল এক মুর্তিমান আতংকের নাম। টেকনাফসহ সারা দেশের হাজার হাজার যুবক বাঘুর হাত ঘরে মালয়েশিয়া পাড়ি জমাতে গিয়ে থাইল্যান্ডে তার সহযোগীদের বন্দিশালায় মুক্তিপণের জন্য নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছিল।
তাদের নির্যাতনের সেই করুণ আর্তনাদ মোবাইলে শুনিয়ে স্বজনদের কাছ থেকে মুক্তিপনের টাকা আদায় করতো এই বাঘু। সে এতই দুধর্ষ ছিল যে কোনো আইন শৃংখলা বাহিনী সে সময় তাকে আটক করতে সক্ষম হননি।
কক্সবাজারের টেকনাফের সেই কুখ্যাত মানব পাচারকারী মো. ইসলাম ওরফে বাঘুকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার বিকাল ৩টার দিকে টেকনাফ থানার উপ পরিদর্শক সোহেল আহমদ টেকনাফ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করেন।
মো. ইসলাম ওরফে বাঘু সাবরাং ইউনিয়নের কচুবনিয়া গ্রামের ফজল আহমদের ছেলে।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ রনজিত কুমার বড়ুয়া জানান, বাঘুর বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় একটি হত্যা মামলা ও একাধিক মানবপাচার মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, মানব পাচার বন্ধ হওয়ার পর বাঘু নতুন করে পুরনো মানব পাচারকারীদের সংগঠিত করে ইয়াবা পাচার শুরু করে। ডাকাত নজির, গুরা মিয়াসহ ইয়াবা পাচারের এই সিন্ডিকেট প্রতি রাতে সাবরাং উপকূল দিয়ে লাখ লাখ ইয়াবার চালান খালাস করে আসছিল।
মোটা অংকের বিনিময়ে এরা টেকনাফের বড় বড় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বৃহৎ চালান সাগর থেকে নিরাপদে নিয়ে এসে তাদের কাছে পৌঁছে দেন। এভাবে ইয়াবার চালান খালাসের দৃশ্য দেখে ফেলায় গত নভেম্বর মাসে নুরল আলম নামে সাবরাং হারিয়াখালী এলাকার এক জেলেকে পিটিয়ে হত্যা করে বাঘু ও তার সহযোগীরা।
সেসময় স্থানীয় ইউপি মেম্বার জাফর এ ঘটনাকে সাগরে পানিতে ঢুবে মৃত্যু হয়েছে বলে ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। বাঘু সেই মামলার দুই নম্বর আসামি।
ওসি রনজিত বড়ুয়া আরও জানান, গ্রেফতার আসামিকে সোমবার আদালতে পাঠানো হবে।